IQNA

প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানী:

বর্তমান সময়ে মুসলিম বিশ্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক হচ্ছে ঐক্য

19:29 - December 27, 2015
সংবাদ: 3470133
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২৯তম ইসলামী ঐক্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানী বলেছেন, মুসলিম বিশ্ব অন্য যে কোন সময় অপেক্ষা বর্তমানে ঐক্য ও সম্প্রীতির প্রয়োজন অনুভব করছে।


বার্তা সংস্থা ইকনা: ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানী আজ রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসলামী ঐক্য সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে ধর্মের নামে যেসব গোষ্ঠী সহিংস তৎপরতা চালাচ্ছে দুঃখজনকভাবে তারা ইসলামকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি ধর্মের নামে সহিংসতা এবং ইসলামকে বিকৃতভাবে তুলে ধরার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রকৃত ইসলাম ও এর শান্তিকামী চেহারাকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরারও পরামর্শ দেন প্রেসিডেন্ট রুহানি। তিনি মানুষের কাছে ইসলামের সঠিক বার্তা পৌঁছে দেয়ার গুরু দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, বর্তমান মানব সমাজ উগ্রপন্থা ও সহিংসতার চোরাবালিতে আটকে পড়েছে।
ড. হাসান রুহানি বলেন, ইসলামের শত্রু ও বড় শক্তিগুলো ইসলামকে সহিংসতার ধর্ম হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। এ প্রচেষ্টা নস্যাৎ করার লক্ষ্যে মুসলমানদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাঁর মতে, ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে পরস্পরের প্রতি ঐক্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া ছাড়া মুসলমানদের অন্য কোনও উপায় নেই।
মধ্যপ্রাচ্য, পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার চলমান সহিংসতা, সন্ত্রাস ও গণহত্যার কথা উল্লেখ করে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, এসব অমানবিক তৎপরতা ইসলামের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার কাজে শত্রুকে সাহায্য করছে। সুনির্দিষ্ট কিছু মুসলিম দেশের পক্ষ থেকে বিপুল পরিমাণ মার্কিন সমরাস্ত্র আমদানির তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, এসব অস্ত্র হয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর হাতে চলে যাচ্ছে অথবা অন্য কোনও মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট এমন সময় মুসলিম ঐক্যের আহবান জানালেন যখন বর্তমান মুসলিম বিশ্ব ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদের কবলে পড়েছে। এমনকি উগ্র সন্ত্রাসবাদের থাবা পাশ্চাত্যেও আঘাত হেনেছে।
বিশ্লেষকগণ বলছেন, সন্ত্রাসবাদের যারা সমর্থক তারাও এখন এ কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে, ধর্মের নামে উগ্র সন্ত্রাসবাদ একবিংশ শতাব্দীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় যুদ্ধ করে কিংবা বোমা মেরে কি উগ্র সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা সম্ভব নাকি বিভ্রান্তির কারণগুলো চিহ্নিত করে আলোচনার মাধ্যমে তাদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয় সম্ভব সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
প্রকৃতপক্ষে, আল কায়দা, দায়েশ, বোকোহারাম, আল শাবাব প্রভৃতি উগ্র গোষ্ঠীগুলো সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে কোনও সীমাপরিসীমা মানছে না এবং এদের প্রতি এ অঞ্চলের কোনও কোনও দেশের সমর্থনের ফলে কেবল মুসলিম উম্মাহই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধর্মের নামে এসব গোষ্ঠীর ভুল চিন্তাভাবনার ফলে সকল নীতিনৈতিকতা পদদলিত হওয়া ছাড়াও উগ্রপন্থার ভয়াবহ বিস্তার ঘটছে। অথচ পবিত্র ইসলাম ধর্মে সকল বর্ণবাদ, জাতীয়তা ও ভৌগোলিক সীমারেখার ঊর্ধ্বে উঠে এমনকি ধর্মীয় বা মাজহাবগত বিশ্বাসের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে সম্মান করার কথা বলে।
শত্রুরা মুসলমান নামধারী বিভ্রান্ত গোষ্ঠীর সহযোগিতায় রহমত, ন্যায়বিচার ও শান্তির ধর্ম ইসলামকে সহিংসতাকামী, হিংস্র ও সভ্যতার জন্য ধ্বংসকারী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে। দুঃখজনকভাবে মুসলমানদের মধ্যেই একদল অজ্ঞ ব্যক্তিরা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য শত্রুদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শত্রুরা শিয়া-সুন্নি বিষয়টিকে সামনে এনে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে যা কিনা মুসলিম উম্মাহর জন্য বড় হুমকি। 

3469778

 

captcha